ইসলামী ব্যাংকের মালিকানায় থাকা সৌদি কোম্পানি আরবসাস ট্রাভেল অ্যান্ড টুরিস্ট এজেন্সি তাদের হাতে থাকা ব্যাংকটির সব শেয়ার গত মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিক্রি করে দেয়। এর আগে প্রতিষ্ঠানটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়।
সৌদি কোম্পানির হাতে ইসলামী ব্যাংকের ৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ শেয়ার ছিল। ইসলামী ব্যাংকের মোট শেয়ারের সংখ্যা ১৬০ কোটি ৯৯ লাখ ৯০ হাজার ৬৬৮টি। সেই হিসাবে ৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ শেয়ারের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৬ কোটি ৮ লাখের কিছু বেশি।
এদিকে, আজ সিএসইতে ইসলামী ব্যাংকের ১৬ কোটি ৯ লাখ শেয়ারের হাতবদল হয়। অর্থাৎ আরবসাস হাতে থাকা পুরো শেয়ারই এদিন বিক্রি করে দেয়া হয়। আজ সিএসইতে হাতবদল হওয়া ইসলামী ব্যাংকের প্রতিটি শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৩২ টাকা ৩০ পয়সা।
বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারের মালিকানার বড় অংশই রয়েছে চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপের হাতে। ব্যাংকটি ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপের হাতে যাওয়ার পর এটির মালিকানা থেকে একে একে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো সরে যেতে শুরু করে। তারই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ মঙ্গলবার সৌদি কোম্পানি আরবসাস ট্রাভেল অ্যান্ড টুরিস্ট এজেন্সি তাদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দেয়।
এর আগে আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) পাঠানো ইসলামী ব্যাংকের এক চিঠিতে বলা হয়েছিল, আরবসাস ট্রাভেল অ্যান্ড টুরিস্ট এজেন্সি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক পদ থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়ার বিষয়টি ব্যাংককে জানিয়েছে। তার ভিত্তিতে ২৬ জুলাই পরিচালনা পর্ষদের সভায় তা অনুমোদিত হয়। মুসাইদ আবদুল্লাহ এ আল-রাজি আরবসাসের পক্ষে দীর্ঘদিন ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। শেয়ার বিক্রি করে দেয়ার মাধ্যমে এখন চূড়ান্তভাবে ব্যাংকটির মালিকানা থেকে নিজেদের সরিয়ে নিল বিদেশি এ প্রতিষ্ঠান।
জানা গেছে, ইসলামী ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংক সিকিউরিটিজ থেকে এসব শেয়ার বিক্রি করা হয়। আর কেনা হয়েছে এস আলমের মালিকানায় থাকা আভিভা ফাইন্যান্সের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আভিভা ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট নামের ব্রোকারেজ হাউসের মাধ্যমে।
ইসলামী ব্যাংক ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে জামায়াতে ইসলামী সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ২০১১ সাল পর্যন্ত একরকম নির্বিঘ্নেই ব্যাংকটি পরিচালনা করে। ২০১১ সালের নভেম্বরে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি নতুন নিয়ম করে, তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির পরিচালক পদে থাকতে হলে ওই কোম্পানিটির ন্যূনতম ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে হবে। এই বিধান করার পর ব্যাংকটিতে জামায়াত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের একচ্ছত্র আধিপত্যে কিছুটা ভাটা পড়ে। ২০১৭ সালে বাজার থেকে শেয়ার কিনে ব্যাংকটির মালিকানায় চলে আসে এস আলম গ্রুপ। এরপর দেশি-বিদেশি অনেক কোম্পানি ও ব্যক্তি শেয়ার ছেড়ে দিতে শুরু করে।