ভারতের সঙ্গে রুপিতে রপ্তানি বাণিজ্য কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশের শীর্ষ ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। এর মাধ্যমে রুপিতে বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য লেনদেন শুরুর উদ্যোগ আরো একধাপ এগিয়ে গেল। দুই দেশের মধ্যে প্রথম আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যিক লেনদেনটি নিজ নিজ মুদ্রায় সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে যৌথভাবে সহযোগিতা করেছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর এক পাঁচতারকা হোটেলে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক (এসসিবি) এবং ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির মধ্যে এক চুক্তি হয়। চুক্তিতে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও গোলাম মুর্শেদ এবং এসসিবি’র সিইও নাসের ইজাজ বিজয় নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সই করেন।
ওয়ালটন রেফ্রিজারেটরের সিবিও তোফায়েল আহমেদ জানান, চলতি বছর ভারতের একটি খ্যাতনামা ইলেকট্রনিক্স পণ্য বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রায় ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ফ্রিজ রপ্তানি করবে ওয়ালটন। যার মধ্যে প্রাথমিক ধাপে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটির কাছে চলতি বছরের নভেম্বর মাসে ১ কোটি ৭ লাখ রুপি মূল্যের ফ্রিজ রপ্তানি করা হবে। এই অর্থের ১০ শতাংশ অগ্রীম লেনদেন ইতোমধ্যে রুপিতে পরিশোধ করেছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটি। এই লেনদনটি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বাংলাদেশি মুদ্রায় ওয়ালটনের বিশেষ অ্যাকাউন্টে জমা করেছে।
ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও গোলাম মুর্শেদ বলেন, বর্তমানে বৈদেশিক বাণিজ্যের লেনদেন নিষ্পত্তিতে মার্কিন ডলার ব্যবহার করছে বাংলাদেশ। এদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ডলার সংকটে পড়েছি আমরা। অন্যদিকে টাকার বিপরীতে ডলারের মূল্যমানও ব্যাপক বেড়ে যাওয়ায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে উল্লেখযোগ্য প্রভাব প্রড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন ডলারের উপর চাপ কমাতে রুপিতে ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। উভয় দেশের এই উদ্যোগকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে ভারতের সঙ্গে রুপিতে রপ্তানি বাণিজ্য কার্যক্রম শুরু করেছে ওয়ালটন।
তিনি জানান, ভারতে ওয়ালটন বছরে প্রায় ১’শ কোটি রুপি মূল্যের ফ্রিজ, কম্প্রেসার ও ফ্যান ইত্যাদি পণ্যসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ রপ্তানি করে। ওয়ালটনের রপ্তানি থেকে প্রাপ্ত আয়ের রুপি দিয়ে ভারতের সমপরিমাণ আমদানি বিল নিষ্পত্তি করতে পারবে বাংলাদেশ। ফলে দুই দেশের লেনদেনের ক্ষেত্রে ডলারের ওপর চাপ কমবে। তাছাড়া উভয় দেশের আমদানিকারক ও রফতানিকারকদের দুবার মুদ্রা বিনিময় করার খরচও কমবে। এতে লেনদেন নিষ্পত্তিতে সময়ও বাঁচবে।