যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে শক্তিশালী ঝড়ে তিনজন নিহত হয়েছেন। উত্তর আমেরিকার এই দেশটির পূর্ব উপকূলে এই ঝড়ের কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাটও দেখা দিয়েছে। সেখানে বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছেন প্রায় সাড়ে ৬ লাখ মানুষ।
এছাড়া ঝড়ের জেরে বন্যা ও ফ্লাইট চলাচলে বিঘ্নের ঘটনাও ঘটেছে। মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হযেছে, যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলে প্রবল ঝড়ের কারণে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে সাউথ ক্যারোলিনার চার্লসটনের বাইরে বন্যার পানিতে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে এবং ঝড়টি কানাডার দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আরও দুই ব্যক্তি মারা গেছেন।
পূর্ব উপকূলের লাখ লাখ বাসিন্দা বন্যা পর্যবেক্ষণে রয়েছেন এবং সোমবার রাতে সেখানকার ৬ লাখ ৩৫ হাজারেরও বেশি মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় ছিলেন। ঝড়টি মঙ্গলবার পর্যন্ত স্থায়ী বলে মনে করা হচ্ছে।
ইউএস ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (এনডব্লিউএস) জানিয়েছে, দুর্যোগময় এই আবহাওয়া ব্যাপক ভারী বৃষ্টিপাত ঘটিয়েছে। এর ফলে নদী ফুলে উঠে ও আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়। কিছু এলাকায় পানির স্রোতে ‘রাস্তাও ভেসে যায়’।
সাউথ ক্যারোলিনার মাউন্ট প্লিজেন্টে ঝড়-সম্পর্কিত প্রথম মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। ন্যান্সি মোরো (৭২) নামে এক নারী পানিতে নিমজ্জিত একটি গাড়িতে আটকে যাওয়ার পর মারা যান বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। যদিও তাকে বাঁচানোর জন্য পানিতে ঝাঁপ দেন কর্মকর্তারা।
ম্যাসাচুসেটসের হ্যানোভার সোমবার রবার্ট হরকি নামে ৮৯ বছর বয়সী এক লোক নিহত হয়েছেন। মূলত তার ট্রেলারে একটি গাছ আঁছড়ে পড়ার পর তার মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে এবং পরে তিনি মারা যান বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এছাড়া সোমবার ঝড়ে মেইনের উইন্ডহামে তৃতীয় এক ব্যক্তি মারা গেছেন। ছাদ থেকে ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করার চেষ্টা করার সময় একটি গাছ তার ওপর পড়ে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। তবে তার পরিচয় এখনও শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।
অন্যদিকে ঝড়ের জেরে এদিন যুক্তরাষ্ট্রের এই অঞ্চলে ফ্লাইট চলাচলেও ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। ফ্লাইটঅয়্যার অনুসারে, ভারী বাতাস এবং বৃষ্টি এদিন বিপজ্জনক ভ্রমণ পরিস্থিতি তৈরি করে। যার ফলে ৪ হাজার ৯০০টিরও বেশি ফ্লাইট বিলম্বিত হয়। আর ভ্রমণ বাতিল করা হয় ৫০০টি ফ্লাইটের। বোস্টন এবং নিউইয়র্ক এলাকায় বিমানবন্দরগুলো সবচেয়ে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এছাড়া নিউ ইংল্যান্ড অঞ্চলের স্কুলগুলোও রাস্তার অবস্থার কারণে ক্লাস বাতিল করতে বা বিলম্বিত করতে বাধ্য হয়। ইউএস ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসের (এনডব্লিউএস) স্থানীয় দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ম্যাসাচুসেটসের বোস্টনে ঝড়ের সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৫০ মাইল (৮০ কিলোমিটার)।