বহুল প্রতীক্ষিত পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ অবশেষে শুরু হয়েছে। সূর্যগ্রহণটি প্রথম প্রত্যক্ষ করেছেন মেক্সিকোর মাজাতলানের বাসিন্দারা। ইস্টার্ন টাইম জোন অনুযায়ী ২টা ৭ মিনিটে সূর্যগ্রহণ শুরু হয়। এ সময় চাঁদ সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে ফেলে। ওই সময় ওই অঞ্চলটি অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। যা ৪ মিনিটেরও বেশি সময় স্থায়ী ছিল।
সব অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে স্থানীয় সময় সোমবার (৮ এপ্রিল) মেক্সিকোতে এই সূর্যগ্রহণ শুরু হয়। অপেক্ষারত সাধারণ মানুষ ওই সময় উচ্ছ্বাশ প্রকাশ করেন।
মেক্সিকোতে প্রকৃতির এই অপূর্ব নিদর্শন যখন দেখা যাচ্ছিল তখন সেটি প্রত্যক্ষ করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের বাসিন্দারা।
সূর্যগ্রহণ উপভোগ করতে বিশেষ চশমা পরে টেক্সাসের বিভিন্ন জায়গায় জড়ো হন হাজার হাজার মানুষ। বিজ্ঞানীরা সতর্কতা দিয়ে বলেছেন, কেউ যেন খালি চোখে এটি প্রত্যক্ষ না করেন। কারণ এতে করে চোখে সমস্যা হতে পারে।
সূর্য ও পৃথিবীর মধ্যকার কক্ষপথে চাঁদের আগমনে চাঁদের ছায়ায় পৃথিবীর একটা অংশ সম্পূর্ণ ঢেকে তৈরি হয়েছে এই পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ। এর ফলে পৃথিবীর ওই অংশে দিনের বেলায় নেমে আসে রাতের মতো অন্ধকার। মহাজাগতিক এমন পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের দৃশ্য দেখার জন্য কোটি কোটি মানুষ উন্মুখ হয়ে ছিলেন। তবে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি এই পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখার সৌভাগ্য হচ্ছে না।
সোমবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মেক্সিকোর নির্দিষ্ট কিছু স্থান থেকে দেখা যাচ্ছে এই পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ। এছাড়া স্পেন, যুক্তরাজ্য, পর্তুগালসহ অন্য আরও কয়েকটি দেশের নাগরিকরা আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখতে পাবেন।
সোমবার যে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ হচ্ছে, তার বিশেষত্ব রয়েছে। যে কারণে অনেকে একে বিরল বলেও অভিহিত করছেন। কারণ এই ধরনের গ্রহণ সচরাচর দেখা যায় না। এরপর ২০৩৩ সালের ২০ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা থেকে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের দেখা মিলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে একটি অঞ্চল থেকে পর পর দু’বার পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখতে অন্তত ৩৭৫ বছর অপেক্ষা করতে হতে পারে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলেছেন, সোমবারের গ্রহণের বিশেষত্ব হল এর স্থায়িত্ব। অপেক্ষাকৃত বেশি সময় ধরে এই গ্রহণ স্থায়ী হবে। টানা চার মিনিট চাঁদের ছায়ায় সম্পূর্ণ ঢেকে থাকবে সূর্য। যা গত ৫০ বছরে কখনও কোনও গ্রহণেই হয়নি। পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সময়ে ওই চার মিনিট ধরে সূর্যের বাহ্যিক স্তর করোনার আভা স্পষ্ট দেখা যাবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।