আমাদের আনন্দ প্রকাশের মাধ্যম হাসি আর কান্না প্রকাশ করে বেদনা। তবে কখনো সুখের কান্নাও হয়, সে প্রসঙ্গে যাচ্ছি না। কাঁদলে চোখ দিয়ে পানি পড়ে, হাসলে কিন্তু নয়। কিন্তু কখনো কখনো এমন হয়, হাসতে হাসতেই আপনার চোখে পানি এসে যাচ্ছে। মিলে গেছে না? এরকমটা শুধু আপনি নন, অনেকের ক্ষেত্রেই ঘটে।
হয়তো বন্ধুদের আড্ডা কিংবা বাড়িতে কোনো আসর, দমফাটা হাসির কিছু শুনে হাসতে শুরু করলেন। হাসতে হাসতে এক সময় আপনার চোখে পানি এসে গেল। অথবা অফিসে কাউকে নিয়ে মজা করছেন, জানেন একটু বেশি হাসলে বসের বকা শুনতে হতে পারে, কিন্তু কে শোনে কার কথা! হাসির চোটে আপনার চোখে পানি এসে যাচ্ছে। হয় না এরকম? কিন্তু জানেন কি, কেন এমন হয়?
আমাদের হাসি বা কান্নার পেছনে থাকে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও। শরীরের অনেক রহস্য আমাদের অজানা। যেমন হাসতে হাসতে চোখে পানি আসার পেছনেও রয়েছে একটা মজার ব্যাপার। আমাদের চোখের পানি তৈরি হয় অশ্রুগ্রন্থিতে। সেই অশ্রুগ্রন্থি থাকে নাকের গোড়া ও চোখের কোণের মাঝখানে। আমরা যখন কান্না করি তখন সেখান থেকেই চোখে পানি আসে।
আপনি যখন কোনো মজার কথা শুনে হাসতে শুরু করেন, অল্পস্বল্প হাসলে সমস্যা নেই কিন্তু যখন খুব জোরে হাসতে শুরু করেন তখন স্বাভাবিকভাবেই আপনার শরীরে কাঁপুনি শুরু হবে। কারণ স্থির হয়ে বসে জোরে হাসা যায় না। বিশ্বাস না হলে চেষ্টা করে দেখতে পারেন। এই জোরে হাসার কারণে শরীরে যে কাঁপুনি শুরু হয় তাতে এতে মুখের পেশিগুলিতে চাপ পড়ে। আর সেই চাপই সোজা অশ্রুগ্রন্থিতে গিয়ে পড়ে।
এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন কেন বেশি হাসলে চোখে পানি আসে? পানি তো কান্না করলে আসার কথা! আসলে অশ্রুগ্রন্থিতে চাপ পড়ার পর সেখান থেকে পানি বের হয়ে এসে চোখের কোলে জমা হয়। তাই হাসতে হাসতে চোখে পানি চলে আসে অনেকের। তবে শুষ্ক হাসি হাসলে হবে না, হাসতে হবে প্রাণখুলে। চোখে পানি এলোই নাহয়, এই চোখের পানি তো আর বেদনার নয়!