জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বিল, ২০২৩’ পাস করা হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জাতীয় সংসদে রোববার (২৯ অক্টোবর) বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন এবং ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে কণ্ঠভোটে এটি পাস হয়।
এর আগে বিলের ওপর আনীত জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করা হয়।
বিলে বলা হয়েছে, সার্টিফিকেশন বিহীন বা বোর্ডের দেয়া মূল্যায়ন প্রতীক দেখা যায় না, এমন কোনো চলচ্চিত্র কোনো স্থানে দেখানো হলে বা দেখানোর প্ররোচনা বা সহায়তা করলে, তা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। এই অপরাধের সাজা হবে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ড।
বিলে আরও বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি কোনো চলচ্চিত্রের সার্টিফিকেশন প্রাপ্তির পর, বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত প্রতীকের কোনো পরিবর্তন ঘটান বা টেম্পারিং করেন বা অনুমোদনবিহীন প্রচার সামগ্রী দ্বারা প্রচার কাজ পরিচালনা করেন বা প্রচারের উদ্দেশ্যে অনুমোদন বিহীন প্রচার সামগ্রী মুদ্রণ, মজুতকরণ ও বাজারজাত করেন, তা হলে এটি হবে একটি অপরাধ এবং এজন্য তিনি অনধিক ২ বছরের কারাদণ্ডে বা অনধিক ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
১৯৬৩ সালের ‘সেন্সরশিপ অব ফিল্মস অ্যাক্ট’ রহিত করে নতুন আইনটি করা হয়েছে। এ বিলে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে নির্মিত চলচ্চিত্র, আমদানি করা বিদেশি চলচ্চিত্র, বাংলাদেশি কোনো ব্যক্তি কর্তৃক দেশে বা বিদেশে নির্মিত এবং যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত চলচ্চিত্র জনসাধারণের মধ্যে প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে পরীক্ষণ ও সার্টিফিকেশন দেওয়ার জন্য সরকার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড নামে একটি বোর্ড গঠন করবে। তথ্যসচিব হবেন ১৪ সদস্যের এই বোর্ডের চেয়ারম্যান।
বিলটির উদ্দেশ ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, দেশীয় চলচ্চিত্র শিল্পের সুরক্ষা, বিকাশ, সংরক্ষণ, পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, রাষ্ট্রের স্বাধীনতা, অখন্ডতা, সার্বভৌমত্ব, চলচ্চিত্র শিল্পের সৃজনশীলতা তথা চলচ্চিত্র শিল্পের সার্বিক উন্নয়ন, চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন প্রদান এবং সার্টিফিকেশনপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র সুষ্ঠুভাবে প্রদর্শনের লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইন, ২০২৩’ শীর্ষক বিলটি আইনে পরিণত করা আবশ্যক বিধায়, বিবেচনা ও অনুমোদনের জন্য এই মহান জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে।
বিল পাসের প্রক্রিয়ায় আলোচনায় অংশ নেন বিরোধী দলীয় সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী, ফখরুল ইমাম, পীর ফজলুর রহমান, বেগম রওশন আরা মান্নান, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ।