প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, নির্ধারিত পদ্ধতি এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা এ ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থানে আছি।’
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নিজ কক্ষে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘পরিবেশ প্রতিকূল হলে নির্বাচন করা হবে না, এ ধরনের কোনো ভুল বোঝাবুঝি যেন জনগণের মধ্যে না থাকে।’
সিইসি বলেন, ‘নির্বাচনী পরিবেশ কেমন আছে পিটার হাস সেটি জানতে চেয়েছেন। আমাদের পক্ষ থেকে তাকে স্পষ্ট করে বলেছি, আমাদের হাতে কোনো অপশন নেই। নির্বাচন কমিশনকে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী এবং নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্ন ভিন্ন অপশন থাকে। তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতেও পারে, নাও করতে পারে। তারা এককভাবে ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে, আবার জোট করেও নির্বাচন করতে পারে। তাদের অপশন আছে কিন্তু নির্বাচন কমিশনের সেই ধরনের কোনো অপশন নেই।’
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আমরা দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাচ্ছি। অনেক সময় নির্বাচনের অনুকূল বা প্রতিকূল পরিবেশ নিয়ে কথা ওঠে। এগুলো খুবই অর্থবহ। নির্বাচনের জন্য অনুকূল হোক বা প্রতিকূল হোক, আমাদের প্রত্যাশা হলো এবং আমরা শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশা করি, বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে পরিবেশ অনুকূল করে তুলবে।’
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘পিটার হাস বিশ্বাস করেন সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক সমাধান সম্ভব। কথাটা আমরাও বলে এসেছি এবং বিশ্বাস করি। রাস্তায় শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হবে বলে আমরা মনে করি না। পিটার হাসও তাই বলেছেন। তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে এক টেবিলে বসে চা-চক্রের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে। পিটার হাসও সবাইকে আহ্বান করবেন বলে জানিয়েছেন।
বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে পিটার হাস বলেন, ‘আমি আশা করি, রাজনৈতিক সংকট নিরসনে দলগুলো শর্তহীনভাবে সংলাপে বসবে এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পথ খুঁজে নেবে।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী আমরা নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা দেখতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করা রাজনৈতিক দল, সরকার, ভোটার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম এবং অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া অবমূল্যায়ন করে এমন যেকোনো প্রতিক্রিয়া, ভোটাধিকার প্রয়োগ, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ, ইন্টারনেট ব্যবহারে বাধা; অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।’