নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সব কিছুই কঠোর হবে, কোন নরম হবে না- এমন কথাই বলেছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।
তিনি বলেন, শান্তি, শৃঙ্খলা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা প্রয়োজন তা করা হবে। যতখানি কঠোর হওয়া প্রয়োজন ততখানি হতে হবে। জাতীয় নির্বাচনে শুধু সেনাবাহিনী ছিল এখন শুধু সেনাবাহিনী থাকবে না। জাতীয় নির্বাচনে একসঙ্গে সব কেন্দ্রে ভোট হয়েছে, এখন সব কেন্দ্রে এক সঙ্গে ভোট হচ্ছে না। কয়েকটি পর্বে ভোট হবে। ফলে নিরাপত্তার জন্য তিন থেকে চারগুণ নিরাপত্তা বাহিনী থাকবে।
রোববার বিকেলে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর আরও বলেন, সম্প্রতি ৭ জানুয়ারি আমরা জাতীয় নির্বাচন করেছি। গোপালগঞ্জে ওই নির্বাচনটি যেমন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে, তেমনি সারা বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে আপনাদের সবার সহযোগিতায় নির্বাচন করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা যে রেকর্ডটি করেছি সুষ্ঠু নির্বাচনের সেটি আমরা ধরে রাখতে চাই। এর মান যাতে আরও ভালো হয়, আরও সুষ্ঠু আরও সুন্দর হয়, এটার কোন পরিধি নেই।
তিনি বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও সুন্দর হয় সেজন্য গোপালগঞ্জে যে কয়টি উপজেলায় নির্বাচন হবে তাতে যেন ভোটাররা সুষ্ঠু ভোট দিতে পারে, সুষ্ঠুভাবে ভোট গনণা হয়, সুষ্ঠুভাবে যাতে ফলাফল ঘোষণা করা যায় এবং জনগণ যাকে ভোট দিবেন তিনিই যেন নির্বাচিত হতে পারেন। কোন প্রভাবশালী ব্যক্তি যেন ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোটারদের কাছ থেকে ভোট আদায় করতে না পারে বা ভোট কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা করতে না পারে। সুষ্ঠু নির্বাচন করতে আমরা কি কি প্রস্তুতি নিয়েছি সেটা জানবো, কোথাও বাড়তি নিরাপত্তা দরকার হলে আমরা পরামর্শ রাখবো।
ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভোট কেন্দ্রে নিরাপত্তা বলতে বোঝায়- একটি হলো ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তা, আরেকটি হলো ভোটাররা যাতে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেন। ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তা বলতে আগে যেটা ছিল জাতীয় নির্বাচন তার থেকে আরও জোরদার করা হয়েছে।
ভোটার উপস্থিত হওয়া প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার বলেন, এটা অভিজ্ঞতা ও অনুমানের ওপর বলতে হবে। কারণ আপনাদের (সাংবাদিক) সঙ্গে কথা বলা রিস্ক। জাতীয় নির্বাচনে কোথাও বলিনি ৮০ ভাগ ভোট পড়বে। কিন্তু অনেকগুলো পত্রিকা লিখে দিয়েছে ৮০ ভাগ ভোট পড়বে। আবার কোন কোন পত্রিকা কলামও লিখে ফেলেছে এজন্য ভয় পাই আর কি। অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা দেখেছি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটের হার বেশি পড়ে। কোথাও কোথাও ৯০ ভাগ ভোটও পড়েছে। এজন্য কত পড়বে এটা বলতে পারবো না, দিন শেষে বলতে পারব কত ভোট পড়েছে। আশা করি ভোটের হার ভালো হবে।
ইভিএম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিগত কমিশন ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) কিনেছিলেন, এটার কিছু সমস্যা ছিল। ইভিএমগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, এটার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে লোকবল, অর্থ এবং সংরক্ষণের যে স্থান সেগুলো আগের প্রজেক্টে ছিল না। না থাকার কারণে এগুলো নষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে। যে ইভিএমগুলো ভালো আছে তার ভিত্তিতে আমরা ৯টি জেলায় ইভিএম-এ ভোট গ্রহণের পরিকল্পনা নিয়েছি।
জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় পুলিশ সুপার আল-বেলী আফিফাসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।