

স্বপ্নের পদ্মা সেতু রেল সংযোগে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর আগে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ঢাকা-ভাঙ্গা অংশের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মাওয়া রেল স্টেশন প্রাঙ্গণ থেকে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তিনি। সকাল ১০টা ১০ মিনিটে সড়ক পথে গণভবন থেকে মাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে ১০টা ৫৮ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী মাওয়া পৌঁছান। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন ছোট বোন শেখ রেহানা।
এর মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলে রেলের নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। যার ফলে পণ্য আনা-নেওয়া সহজ হওয়ার পাশাপাশি প্রসার হবে ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প কারখানার। যা অবদান রাখবে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে।
পদ্মা সেতুতে রেল চলাচলের মাধ্যমে রেলপথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এল রাজধানী ঢাকার কাছাকাছি। রেলপথে ঢাকা-খুলনার দূরত্ব কমল ২১২ কিলোমিটার। স্বল্প সময়ে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে সম্ভাবনার দুয়ার গেল খুলে।
চীনের ঋণে প্রায় ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার ব্রডগেজ সিঙ্গেল লাইন নতুন রেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে। এই রেলপথের রাজধানীর গেণ্ডারিয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৭৭ কিলোমিটার চালু হচ্ছে আজ। প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী বছর জুনে যশোর পর্যন্ত ট্রেন চলবে।
গত বছরের ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেন প্রতীক্ষার পদ্মা সেতু। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ দ্বিতল এই সেতুর ওপরতলায় চলছে গাড়ি; নিচতলা দিয়ে চলবে ট্রেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে পদ্মা সেতুতে রেললাইন স্থাপন শুরু হয়। পদ্মা সেতুর মতো পদ্মা রেল সংযোগও সরকারের অগ্রাধিকারের প্রকল্প। টাকার অঙ্কে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং মেট্রোরেলের পর এটি তৃতীয় বৃহত্তম প্রকল্প। পদ্মা রেল সংযোগের উদ্বোধন উপলক্ষে সাজ সাজ রব পড়ে পদ্মার দুই তীরে।
১৬৯ কিলোমিটার ছাড়া আরও তিন কিলোমিটার মূল লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে প্রকল্পের অধীনে। ৪৩ দশমিক ২২ কিলোমিটার সাইড এবং লুপলাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। সর্বমোট নতুন রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে ২১৫ দশমিক ২২ কিলোমিটার।
৬৬টি বড় সেতু নির্মাণ করা হয়েছে এই রেলপথে। ২৪৪টি ছোট সেতু এবং কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। মাওয়ায় একটি সড়ক ওভারপাসসহ ২৯টি লেভেল ক্রসিং নির্মাণ করা হয়েছে। এ রেললাইন পুরো পথে কোথাও গাড়ি চলাচলে বাধা হবে না। ১৪টি নতুন স্টেশন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। পুরোনো ৬টি স্টেশনের খোলনলচে বদলে আধুনিকায়ন করা হয়েছে। ঢাকা-পদ্মা সেতু-ভাঙ্গা অংশে স্টেশন সংখ্যা ৯টি। ২০টি স্টেশনই চলবে কম্পিউটারভিত্তিক ইন্টারলক্ড সিগন্যাল পদ্ধতিতে। এক হাজার ৭৯৬ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হয়েছে প্রকল্প বাস্তবায়নে।