ফেনী শহরে অস্ত্র হাতে দুই যুবকের গুলি ছুড়তে থাকার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর অস্ত্রধারী দুই যুবককে নিয়ে জেলা ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলে শুরু হয়েছে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) রাতে শহরের তাকিয়া রোডে ছাত্রদলের মশাল মিছিল চলাকালে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এরপরই মিছিলে গুলির ঘটনা ঘটে। এতে ছাত্রদলের ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন ছাত্রদলের নেতারা। অন্যদিকে একই সময়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে ফেনী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ওসমান গনি লিটনকে (২৬)। গত মঙ্গলবার রাত পৌনে ৮টার দিকে শহরের বড় বাজার পানির ট্যাংকির গলিতে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ভাইরাল হওয়া একটি ফুটেজে দেখা গেছে— মুখে মাফলার পরিহিত এক যুবক এবং আরেকজন হেলমেট পরিহিত যুবক শটগান দিয়ে গুলি ছুড়ছেন। তাদের সাথে আরও ৭-৮ জন যুবকের হাতে হকিস্টিক ছিল। যুবদল ও ছাত্রদলের দাবি, তারা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। তবে এমন অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে ছাত্রলীগ বলছে, তারা ছাত্রদলের লোক।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা যুবলীগ সভাপতি দিদারুল কবির রতন বলেন, ভিডিওতে যাদের দেখা গেছে তারা আমাদের দলের কেউ নয়। তারা যুবদল-ছাত্রদলের সন্ত্রাসী। ওইদিন তাদের গুলিতে একজন ছাত্রলীগ নেতা আহত হয়েছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আলম মিলন বলেন, ওই ছাত্রলীগ নেতা নিজ দলের নেতার গুলিতে আহত হয়েছে। আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে তাদের গুলিতে ১০ জনের মতো নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত ছাত্রলীগ নেতা ওসমান গনি লিটন এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তখন ছাত্রদলের অনেক নেতাকর্মী অস্ত্র নিয়ে প্রথমে ককটেল ছোড়ে। পরে গুলি করলে আমার চোখ, হাত ও পিঠে লাগে। ঘটনাস্থলে পড়ে গেলে আমার সতীর্থরা হাসপাতালে নিয়ে আসে।
ফেনী পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত তুষার বলেন, ফেনীতে বিএনপি-জামায়াতের অপতৎপরতা রুখতে শহর ও মহাসড়কে ছাত্রলীগ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছে। তারই ধারাবাহিকতায় সেদিনও বড় মসজিদ এলাকায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান করছিল। এসময় ছাত্রদলের একটি মিছিল থেকে জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন রিয়াদ, যুগ্ম সম্পাদক শওকত আলী জুয়েল, পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব ইব্রাহিম হোসেন ইবু, পায়েলসহ ছাত্রদল নেতারা অস্ত্র-গুলি নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের ওপর হামলা চালায়। এতে ওসমান গনি লিটন গুলিবিদ্ধ হয়।
ফেনী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, গুলি ছোড়ার ভিডিওটি নজরে এসেছে। ওইদিন (মঙ্গলবার) কারা হামলা করেছে এবং অস্ত্রধারীদের শনাক্তে কাজ চলছে। শনাক্ত করা গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।