খাগড়াছড়ি রামগড় উপজেলায় কৃষকদের সরিষা চাষে আগ্রহ বেড়েছে।এ বছর ২৫৫ জন কৃষক ৩৭ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের সরিষার চাষ করেছে। ১৮ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৩৭ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে ।যা লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুনের বেশি। ৬০ মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদন হবে বলে ধারণা করেছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। উৎপাদনের লক্ষমাত্রা বাস্তবায়নে কৃষকদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা ও সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।উপজেলা কৃৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়,গত বছর ৩৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছিল।
এ বছর রামগড় পৌরসভা ও দুটি ইউনিয়নে ২৫৫ জন কৃষক প্রায় ৩৭ হেক্টর জমিতে বারি ১৪,১৭ ,১৮ বীনা ৯ ও ১৪ জাতের সরিষা আবাদ করেছে। সরজমিনে পৌর এলাকার ফেনীর কুল ,সদু কারবারি পাড়ার কয়েকটি সরিষা খেতে গিয়ে দেখা যায়,মাঠ জুড়ে শোভা পাচ্ছে হলুদ ফুলের ।বাতাসে দেলো খাচ্ছে সরিষা ফুল।মৌমাছিরা ফুলে ফুলে বেড়িয়ে মধু সংগ্রহ করছে।চারদিকে ফুলের গন্ধ মৌ মৌ করছে।মাঠ যেন হলুদ চাদরে ঢাকা। কৃষক মকবুল হোসেন জানান,আমন ধান কাটার পরে বোরো ধান রোপনের আগ পর্যন্ত কয়েক মাস জমি অনাবাদি থাকে ।এই সময়টাতে সরিষা আবাদ করে স্বল্প সময়ে ফসল ঘরে তোলা যায়।এতে জমিও অনাবাদি থাকবে না,আর্থিকভাবেও লাভবান হওয়া যায়।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শরিফ উল্লা বলেন, কৃষকদের তেল বীজ শস্য চাষে আগ্রহী করতে সরকারি ভাবে কৃষকদের প্রনোদনার সরিষা ও সূর্যমূখী বীজ বিতরণ করা হয়েছে। স্থানীয় বাজারের চাহিদা কম এবং সরিষা ভাঙ্গানোর সদস্যায় এতদিন কৃষকেরা এফসল চাষে আগ্রহ দেখায়নি। বর্তমানে রামগড় বাজারে ব্যক্তি উদ্দ্যোগে সরিষা ভাঙ্গানোর বৈদুতিক ঘানি স্থাপনে কৃষকদের মাঝে কিছুটা স্বস্থি ফিরেছে। তিনি আরো বলেন সরিষা চাষে খরচ কম অল্প সময়ে ফসল তোলা যায়। বর্তমান বাজার মূল্য ভাল হওয়ায় আর্থিক লাভের সুযোগও বেশী। তাছাড়া ক্ষেতের আশেপাশে মৌচাক বসিয়ে কৃষক মধু সংগ্রহ করে বাড়তি একটি আয় করতে পারেন। কৃষি বিভাগ শুধু সরিষা নয় কৃষি সংক্রান্ত কৃষকের যেকোন সমস্যায় প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সেবা দিয়ে থাকে।
স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে উচিত মূল্যে সরিষা ক্রয় করতে আগ্রহ প্রকাশ করে সরিষার গানির মালিক নারায়ন চন্দ্র নাথ বলেন বর্তমানে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফেনীসহ বিভিন্ন জায়গা হতে সরিষা সংগ্রহ করতে হয়। এতে খরচ অনেক বেশী। স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে কিনতে পারলে দেশীয় সরিষাটা পাওয়া যেত এবং লাভও বেশী হত।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, উপজেলায় গত বছরের চেয়ে এ বছর সরিষা চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে । এ বছর সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৮ হেক্টর জমিতে। চাষাবাদ হয়েছে ৩৭ হেক্টর। যা লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুন।
তিনি আরও বলেন ,দেশে প্রতি বছর প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার তেল আমদানি করতে হয়। আমরা যদি দেশে তেল উৎপাদন বাড়াতে পারি তাহলে বৈদেশিক নির্ভরতা কমবে খরচও বাচঁবে। এজন্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনে বিভিন্ন কর্মসূচির আওতায় কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণ, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণও অন্যান্য কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
-মোঃ মোজাম্মেল হোসাইন