রতন বৈষ্ণব ত্রিপুরাঃ খাগড়াছড়ি পার্বত্যাঞ্চলের চেঙ্গী নদী, ফেনী নদী, পিলাক নদী ও বিভিন্ন ছড়ার পানি কমায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে বিশুদ্ধ পানির সংকট তীব্র হচ্ছে। বর্তমানে খাগড়াছড়ি সদর, দীঘিনালা , মহালছড়ি ও পানছড়ি, মাটিরাঙা,গুইমারা,লক্ষীছড়ি, রামগড় ও মানিকছড়ি উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে চেঙ্গী ও ফেনী নদীসহ পাহাড়ী ঢল অব্যাহত থাকায় রামগড় উপজেলার নিম্নাঞ্চল ও দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রাম এখনও পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তির উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ চলমান রয়েছে। পাহাড়ের প্রত্যান্তঞ্চলে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট রয়েছে বলে তথ্য খবর পাওয়া গেছে।
খাগড়াছড়ি সদরের চেঙ্গী নদী ও পিলাক নদীতে এখনো প্রবল স্রোত থাকায় নদী অতিক্রম করে অনেক এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। প্লাবিত অঞ্চলে নানা রকম শুকনো খাবর, রান্না করা খাবার, ঔষধ, খাবার স্যালাইন ও বিশুদ্ধ পানি নেয়া হচ্ছে। স্থানীয় জেলা প্রশাসক, উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও বিজিবি পাশাপাশি বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, এনজিও, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ, বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদ, মারমা উন্নয়ন সংসদ, রোভার স্কাউটস, যুব রেড ক্রিসেন্ট এবং অনেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ত্রাণ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। এ সংকটকালে মানবিক সহায়তায় কাজ করছেন বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধিরা।
সম্প্রতি নজিরবিহীন বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বসতবাড়ি, কৃষি খামার, মৎস্য খামার ও গ্রামীণসহ শহরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বন্যায় কবলিত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপক চিত্র। কোথাও বসত ভিটার উপর পড়ে আছে মাথা ঘোজার ছোট নীড়, কোথাও ভেসে গেছে পুরো বাড়ি। হঠাৎ বন্যার পানি ঢোকায় পরিবার পরিজনসহ নিজের জীবন নিয়ে বের হতে পারলেও পানি নামার পর ফিরে এসে কিছু পাননি। আউশ আমন ক্ষেতের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি সবজির খেত তলিয়ে যাওয়ায় নষ্ট হয়েছে কৃষকের স্বপ্ন। কোথাও সড়কে তৈরী হয়েছে বড়বড় গর্তসহ পাহাড় ধস।
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, স্মরণকালের ভয়াবহ এ বন্যায় খাগড়াছড়ি জেলার অধিকাংশ উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য নিরুপণে কাজ করছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলো।
এ দিকে গত শুক্রবার খাগড়াছড়ি সদরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্ট সুপ্রদীপ চাকমা। পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, বন্যা দুর্গত মানুষদের পাশে দাঁড়াতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকবে সরকার।
রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতা আফরিন এ প্রতিনিদিকে বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে কন্টোল রুমসহ আশ্রয়ণ কেন্দ্র খোলার মাধ্যমে জরুরীভিত্তিতে শুকনো ও খেচুরী রান্না খাবার এবং ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হয়েছে। যা বর্তমানে বন্যার্তদের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।