

নিউজ ডেস্ক: এক সময় ভাঙা ঝুপড়ি ঘরই ছিল বরেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ও তার স্ত্রী প্রভাতী ত্রিপুরার একমাত্র আশ্রয়। বয়সের ভার, দারিদ্র্যের কঠিন চক্র, আর সরকারি সহায়তার অভাবে কেটেছে তাদের জীবনের অনেক বছর।
কিন্তু এক সংবাদ বদলে দিল তাদের জীবন। বিভিন্ন পত্র- পত্রিকায়- খবরটি প্রকাশিত হওয়ার পর তাদের অসহায় জীবনের খবর পৌঁছে যায় খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডারের কাছে। রিজিয়ন কমান্ডার সরেজমিনে পরিদর্শন করেন এবং পরবর্তীত্বে সেনাবাহিনীর নিজস্ব অর্থায়নে ও স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় শুরু হয় নতুন ঘর নির্মাণের কাজ।
অবশেষে সেই প্রতীক্ষার অবসান! আজ (১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) দুপুরে খাগড়াছড়ি সদর জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ খাদেমুল ইসলামের উপস্থিতিতে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার পেড়াছড়া ইউনিয়নের বেলতলি পাড়ার ৭৩ বছর বয়সী বরেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ও ৭০ বছর বয়সী প্রভাতী ত্রিপুরাকে খাগড়াছড়ি রিজিয়ন পক্ষ থেকে নতুন ঘর উপহার হিসেবে প্রদান করা হয়।
ঘর হস্তান্তরকালে সাংবাদিকদের খাগড়াছড়ি সদর জোনের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল খাদেমুল ইসলাম বলেন, আমরা সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে জানতে পারি এই অসহায় দম্পতির দুরবস্থার কথা। এরপর খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার মহোদয়ের নির্দেশে আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নিই এবং আজ তাদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত করতে পেরেছি।
নতুন ঘর পেয়ে আনন্দিত বরেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, আগে তো আমার ঘর নাই, এখন তো আর্মিরা ঘর দিয়েছে, এখন সুখে শান্তিতে থাকতে পারবো।
প্রভাতী ত্রিপুরা বলেন, আগে তো ভাঙা ঘরে থাকতাম, এখন ঘর পেয়ে খুব ভালো লাগতেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বিপ্লব ত্রিপুরা রিংকু ও বিএনপি ইউনিয়ন সভাপতি সরনাথ ত্রিপুরা এই মহৎ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। ইউপি সদস্য বিপ্লব ত্রিপুরার রিংকু বলেন, সাংবাদিকরা বিষয়টি তুলে না ধরলে হয়তো এভাবে দ্রুত সমাধান হতো না। আমরা সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই, যারা অসহায় হতদরিদ্রের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
এটি শুধু একটি ঘর নয়, এটি স্বপ্ন পূরণের গল্প। এটি প্রমাণ করে মানবিক সহযোগিতা এবং সাংবাদিকতার শক্তি সমাজ পরিবর্তন করতে পারে।
খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়নের পক্ষ থেকে বারবারই বলা হয়েছে—এই অঞ্চলের কেউ গৃহহীন থাকবে না, কেউ না খেয়ে থাকবে না। আর আজকের এই কাজ সেই অঙ্গীকারের বাস্তব রূপ।
বরেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ও তার স্ত্রী প্রভাতী বালা ত্রিপুরার মুখে এখন হাসি, কারণ তাদের মাথার উপর এখন একটি নিরাপদ আশ্রয় রয়েছে। সেনাবাহিনীর এই মহৎ উদ্যোগ সমাজে আরও ইতিবাচক পরিবর্তন এনে দেবে। – রতন বৈষ্ণব ত্রিপুরা।