পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ পৃথিবী থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বছরে ৩.৮ সেন্টিমিটার করে পৃথিবী থেকে দূরে সরে যাচ্ছে চাঁদ। ১৯৬৯ সালে অ্যাপোলো অভিযানে চাঁদে যখন মহাকাশচারী পাঠিয়েছিল নাসা, সেই সময়েই চাঁদের মাটিতে তারা প্রতিফলক প্যানেল বসিয়ে রেখেছিল। তাতেই ধরা পড়েছে বছরের পর বছর চাঁদের সরণ।
কিন্তু কেন সরছে চাঁদ? কেনই বা তা নিয়ে পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা মাথা ঘামাচ্ছেন? চাঁদের সঙ্গে পৃথিবীর দূরত্ব আরও বৃদ্ধি পেলে ভবিষ্যতে কী পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে?
বিজ্ঞানীদের অনুমান, চাঁদ যে ধীরে ধীরে পৃথিবীর সঙ্গে দূরত্ব বৃদ্ধি করছে, তার নেপথ্য রয়েছে পৃথিবীর মিলানকোভিচ চক্র। পৃথিবীতে আবহাওয়ার অস্বাভাবিক কোনও পরিবর্তনের জন্যও এই চক্রকে দায়ী করা হয়।
বিজ্ঞানীরা দীর্ঘ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন, পৃথিবীর কক্ষপথ এবং অক্ষের অবস্থানে মাঝেমধ্যে কিছু তারতম্য হয়। যার প্রভাব পড়ে পৃথিবীতে সূর্যরশ্মির বিকিরণের উপরেও।
চাঁদের গতিবিধি এবং পৃথিবীর কক্ষপথ, অক্ষের বিবর্তন স্পষ্ট করে বুঝতে আরও বিস্তারিত গবেষণা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সেই চেষ্টা চলছে। পৃথিবীর আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রাচীন শিলার মধ্যেই চাঁদ এবং পৃথিবীর বিবর্তনের চিহ্ন লুকিয়ে আছে। সেই প্রাচীন পাথরখণ্ডের খোঁজ করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় এই ধরনের শিলার খোঁজ মিলেছে। শিলার উপরে জমা পলির স্তর পর্যবেক্ষণ করে বিজ্ঞানীরা মিলানকোভিচ চক্রের স্থায়িত্ব এবং তার ভিত্তিতে চাঁদের সরণ বোঝার চেষ্টা চালাচ্ছেন।