

গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে প্রতিদিনই বড় হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। গতকাল সোমবার সেই মিছিলে যোগ দিল আরও ৮১ ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে ৫৩ জনই গাজা সিটির বাসিন্দা। আজ মঙ্গলবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।
গত রোববার রাত থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত চালানো ইসরায়েলি এত বিপুলসংখ্যক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, রোববার রাতভর ইসরায়েলের চালানো হামলার বেশির ভাগেরই লক্ষ্যবস্তু ছিল বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় নেওয়া বিভিন্ন স্থাপনা। তবে, ইসরায়েলের দাবি—হামাস এবং ইসলামিক জিহাদের কমান্ড এবং কন্ট্রোল সেন্টার লক্ষ্য হামলা চালিয়েছে তারা।
বেসামরিক হতাহতের জন্য ইসরায়েল ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকেই দায়ী করছে। তাঁদের ভাষ্য, গাজার নিরস্ত্র মানুষকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে তারা। উপত্যকাটিতে বেসামরিক হতাহতের দায় ইসরায়েলের নয়, বরং হামাসেরই! ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) বলছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় গাজাজুড়ে হামাস ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর প্রায় ২শ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে তারা।
ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ প্রতিবেদক ফ্রান্সেসকা আলবানিজ গত রোববার সামাজিক মাধ্যমে ফাহমি আল-জারজাবি স্কুলে ইসরায়েলি হামলার একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। যাতে দেখা যায়, ইসরায়েলি হামলায় স্কুলটিতে আগুন ধরে যাওয়ার পর, ওই আগুনে জীবিত অবস্থায় পুড়ে মারা যায় এক শিশু। ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ৪ লাখ ৭০ হাজার বার দেখা হয়েছে।
ওই ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘এই আগুনের চিত্র আমি আর দেখতে পারছি না। যতবার দেখার চেষ্টা করছি আমার মাথা ঘোরাচ্ছে, পেট গুলিয়ে উঠছে। ফিলিস্তিনিরা যেন আমাদের মাফ করে।’
আজ মঙ্গলবারও উপত্যকাজুড়ে বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে নেতানিয়াহুর সেনারা। আল-জাজিরা জানিয়েছে, গাজা সিটির আল-কারামা এলাকায় ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে আইডিএফ। ওই হামলায় এখন পর্যন্ত এক শিশু নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে, আশঙ্কা করা হচ্ছে—হতাহতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়বে।
এ ছাড়া মধ্য গাজার জয়তুন ও আজ-জাওয়াদা শহরেও দুজন নিহতের তথ্য পাওয়া গেছে। প্রায় ২০ মাস ধরে চলা এই হত্যাযজ্ঞে গাজায় নিহত হয়েছেন ৫৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।